moviestop 10

সেরা ১০টি অ্যানিমেশন মুভি- বাংলা রিভিউ

 একশন ও থ্রিলার মুভি যেমন কিছু কিছু দর্শকের মন জয় করে নেয় , তেমনই ভিন্ন এক দিক থেকে অ্যানিমেশন মুভিগুলোও তাদের নিজস্ব আবেদনের মাধ্যমে দর্শকের মন জয় করে নেয় । এসব মুভিগুলোতে সারল্যতাই তাদের শক্তি । এই ধাঁচের মুভিগুলো দর্শকের মনে অন্যরকম এক আদরের অবস্থান গড়ে নেয় । এখানে এরকমই কয়েকটি অ্যানিমেশন মুভি নিয়ে আলোচনা করবো যা ইতিহাসে বিখ্যাত ও বিশ্ববিখ্যাত ফিল্ম হিসেবে পরিচিতি ।

top 10 animation movie bangla review

রায়া এন্ড দ্যা লাস্ট ড্রাগন ( Raya and the Last Dragon )

মুভিটি পরিচালনা করেছেন ডন হল ও কার্লোস ল্যাপেজ এস্ট্রাদ এবং গল্পের লেখক ছিলেন কুই এনগুইন , অ্যাডেল লিম । ২০২১ সালে রায়া এন্ড দ্যা লাস্ট ড্রাগন মুক্তি পায় । সিনেমাটি শুরু হয় যেখানে ধর্ম নেই , বর্ণ নেই , জাতি নেই , প্রভেদ নেই , আছে শুধু বিশ্বাস । বিশ্বাসের জোরে প্রেম , ভালবাসা , হাসি , আনন্দ , খুশি , সেখানে সবাই সুখী । কোন দুঃখ নেই , কষ্ট নেই , স্বর্গের মতো । প্রকৃতিও তার সমস্ত কিছু উজাড় করে দিয়েছে । তারপর , প্রথমেই ভাঙলো বিশ্বাস । খন্ডিত হল সীমারেখা । আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেল পৃথিবী । নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে উঠে পরে লাগলো সবাই । উন্নত হল সভ্যতা । গড়ে উঠলো মিল-কারখানা । হাজির হল মনস্টার গ্লোবাল ওয়ার্মিং । শুরু হল মানুষে মানুষে প্রভেদ , বিভেদ । এল ধর্ম, বর্ন , জাতি গত বিভাজন । চলে গেল প্রেম , ভালোবাসা , মায়া-মমতা , হাসি , আনন্দ । এসব নিয়েই তৈরি করা হয় রায়া এন্ড দ্যা লাস্ট ড্রাগন ।

কুং-ফু পান্ডা ( Kung Fu Panda )

মুভিটি পরিচালনা করেছেন জন স্টিভেনসন । গল্পের লেখক ছিলেন ইথান রিফ এবং সাইরাস ভরিস । ২০০৮ সালে কুং-ফু পান্ডা মুক্তি পায় । কুং-ফু পান্ডা এর ৩টি পূর্বের রয়েছে । আগের দুই মুভিতে পো কিভাবে সত্যিকারের পান্ডা হয়ে উঠে আর তাঁর হারানো অতীতের কাহিনী ছিল । কুং-ফু পান্ডা ২ এর শেষে দেখানো হয়েছিল চীনের কোন এক প্রত্যন্ত গ্রামে পো’র বাবা এবং অন্য পান্ডারা আছে । সেই সূত্র ধরেই কুং-ফু পান্ডা ৩ শুরু হয় পো এবং তার বাবা লি এর পুনর্মিলন দিয়ে । একটি দুর্বল প্রাণী থেকে কিভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠা যায়, সেই গল্পই দেখনো হয় ছবিতে ।

মোয়ানা ( Moana )

মোয়ানা মুভিটি পরিচালনা করেছেন রন ক্লিমেটস এবং জন ম্যাসকার । গল্পের লেখক ছিলেন জারেড বুশ । ২০১৬ সালে মোয়ানা মুভিটি মুক্তি পায় । চলচ্চিটি পলিনেশিয়ার এক গ্রাম প্রধানের তীব্র ইচ্ছাশক্তির অধিকারী মেয়ে মোয়ানাকে কেন্দ্র করে নির্মিত । এক পৌরানিক দেবীর হৃদয় পুনরুদ্ধারের জন্য মহাসাগর তাকে নির্বাচন করে । তার দ্বীপে অশুভ প্রভাব দেখা দিলে তার লোকজনকে এই বিপদ থেকে রক্ষার আশায় টি-ফিটি’র হৃদয় উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে সে কিংবদন্তি উপদেবতা মাওয়ি’র খোঁজে সমুদ্র যাত্রায় বেরিয়ে পড়ে ।

রিও ( Rio )

রিও মুভিটি পরিচালনা করেছেন কার্লোস সালদানহা । এত সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন আর্ল রিচি জোন্স এবং টড জোনস । ২০১১ সালে রিও মুভিটি মুক্তি পায় । সিনেমাটি বিরল প্রজাতির এক জোড়া নীল ম্যাকাও পাখিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে । আমাজন এর জঙ্গলে ব্লু এর বাবা-মা সহ অন্য পাখিরা নির্ভয়ে সুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছিল কিন্তু একদিন হঠাৎ সেই বনে পাখি শিকারীরা হামলা চালায় এবং ছোট্ট ব্লু সহ অনেক পাখিকে ধরে নিয়ে যায় পাচার করে দেয়ার জন্য । ঘটনাক্রমে ব্লু পাচারকারীদের পাখির বাক্স থেকে নিচে পড়ে যায় এবং লিন্ডা তাকে খুঁজে পায় । লিন্ডা রিওকে খুব ভালবাসা দিয়ে বড় করতে থাকে ।

পোকেমন ( Pokémon )

পোকেমন মুভিটি পরিচালনা করেছেন রব লেটারম্যান এবং এতো সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন ড্যান হার্নান্দেজ , বেনজি সামিত ও নিকোল পার্লম্যান । ২০১৯ সালে পোকেমন মুভিটি মুক্তি পায় । ২১ বছরের ছেলের নাম টিম সে জানতে পারে যে তার বাবা একটি এক্সিডেন্টে মারা গেছে । তাই সে ট্রেনে করে তার বাবা যে শহরে থাকতো সে শহরে গিয়ে তদন্তকারী অফিসারের সাথে দেখা করে এবং তার বাবার বাসার চাবি নিয়ে তার বাবার বাড়িতে যায় । সেই বাসায় থাকাকালীন সে ঘরের ভিতর কিছু সন্দেহজনক শব্দ শুনতে পায় , সে মনে করে কোন চোর হবে । কিন্তু ওখানে ছিলো পিকাচু , আসলে পিকাচুটি ছিলো তার বাবার । টিম পোকিমন দের থেকে দূরে থাকতে চায় তাই সে পিকাচুর কাছে থেকেও দূরে যেতে যায় । কিন্তু কিছু ঘটনা ঘটার পর পিকাচু বলে তার বাবা এখনো বেচে আছে । তখন শুরু হয় আসল কাহিনী ।

দি বস বেবি ( The Boss Baby )

দি বস বেবি মুভিটি পরিচালনা করেছেন টম ম্যাকগ্রা এবং গল্পের লেখক ছিলেন মারলা ফ্রেজি । ২০১৭ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । সাড়ে ৭ বছরের বাবা-মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান টিম । সে কল্পনা করতে ভালবাসে আর কল্পনার রাজ্যে তার সঙ্গী হয় তার মা-বাবা । শত ব্যস্ততার মধ্যেও টিমের মা-বাবা তার আদর যত্নের কোনো কমতি রাখেন না । টিমের বাবা-মা তাঁর কাছে জানতে চায় , তাঁর একটা ছোট ভাই হলে কেমন হয় ? টিম সোজাসুজি না বলে দেয় এই ভেবে যে , তাঁর ছোট ভাই হলে তার আদর-ভালবাসা কমে যাবে । একদিন টিম দেখতে পায় , একটা টেক্সি থেকে স্যূট ,বুট , টাই পরা একটা বাচ্চা তাদের বাসায় আসছে । তার মা-বাবা তাকে টিমের ছোটভাই বলে পরিচয় দেয় ।এই ছোট বাচ্চাটিই হল ” বস বেবি ” । বাচ্চাটি বাড়ির সবাইকে মাতিয়ে রাখে । কিছুদিন পর টিম লক্ষ্য করল , টিমের প্রতি তার মা-বাবার ভালবাসা , মনোযোগ আর আগের মত নেই । সব এই বস বেবি কেড়ে নিয়েছে । এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে গল্পের কাহিনী ।

দি লায়ন কিং ( The Lion King )

দি লায়ন কিং মুভিটি পরিচালনা করেছেন জন ফেব্রেয়াউ । এত সুন্দর গল্পের লেখক ছিলেন আইরিন মেকি , জোনাথন রবার্টস এবং লিন্ডা উলভারটন । ২০১৯ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । আফ্রিকার জঙ্গলের প্রকৃতি ও পশুদের জীবনযুদ্ধ গল্পের কাহিনী । সেখানে সিংহ সিম্বা কীভাবে জঙ্গলের রাজা হয়ে উঠবেন সেই গল্পই তুলে ধরা হয়েছে । বনের রাজা মুফাসা । তার একমাত্র সন্তান সিম্বা , যে জন্মগত ভাবেই সাহসী । একদিন সিম্বার চাচার ষড়যন্ত্রে পরে মারা যায় মুফাসা । যাতে নিজেকে দোষী মনে করে সিম্বা । ভাগ্যক্রমে নিজের জন্মস্থান থেকে দূরে চলে যেতে হয় সিম্বাকে । দিন যত যায় বনের অবস্থা ততই খারাপ হতে থাকে । অনেক বছর পর সিম্বা তার বাবার প্রতিশোধ নিতে তার বাড়ি ফিরে আসে এবং জঙ্গলের রাজা হয়ে যায় ।

ট্যাঙ্গলড ( Tangled )

ট্যাঙ্গলড মুভিটি পরিচালনা করেছেন নাথান গ্রেনো এবং বায়রন হাওয়ার্ড । গল্পের লেখক ছিলেন ব্রাদারস গ্রিম । ২০১০ সালে ট্যাঙ্গলড মুভিটি মুক্তি পায় । রাজকুমারী রূপানজেলকে শিশুকালে এক বৃদ্ধা চুরি করে নিয়ে যায় । কারণ রাজকুমারীর সোনালী চুল ছিল ম্যাজিকাল যার মাধ্যমে বৃদ্ধা হাজার হাজার বছর চির যৌবন থাকতে পারবে । সে রাজকন্যাকে জংগলের মধ্যে একটি মহলে আটকিয়ে রাখে । এইদিকে রাজা-রানী রাজকুমারীর ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে । তারা রাজকন্যার প্রত্যেক জন্মদিনে ফানুস উড়াতো যা রূপানজেল ওই মহলে বসে দেখতে পেত । একদিন রাজমহল থেকে মুকুট চুরি করে এক চোর পালাচ্ছিল । সে ভুল করমে ওই রূপানজেল এর মহলে এসে পৌছাই । রূপানজেল তাকে দেখতে পেয়ে মাথাই আঘাত করে অজ্ঞান করে দেয় । জ্ঞান ফিরলে তাকে শর্ত দেয় সে যদি তাকে ওই ফানুস এর কাছে ১৮ তম জন্মদিনে নিয়ে যায় এবং নিরাপদে মহলে ফিরিয়ে আনে তাহলেই মুকুটটি তাকে ফেরত দেবে । সেখানে যাওয়ার পথে দুজনের প্রেম হয়ে যায় ।

দি উইলোবিস ( The Willoughbys )

লুইস লোয়েরির উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই অ্যানিমেশন মুভির পরিচালক ছিলেন ক্রি প্রিয়ান । ২০২০ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । মুভিটি আমাদের এটাই শিক্ষা দেয় যে , যেখানে জন্ম গ্রহণ করেছি কেবল সেটাই পরিবার নয় । বরং যাদেরকে পাশে নিয়ে সারাজীবন বাঁচতে চাই তারাই পরিবার । সিনেমাটিতে , বাবা-মা ছুটি কাটাতে দূরে গেলে উইলোবিস পরিবারের বাচ্চাগুলো ও নিজেকে সব ধরনের শাসন আর নিয়ম-নীতি থেকে মুক্ত অবস্থায় আবিষ্কার করে । তাদের দেখভালের জন্য বাবা-মা যে ন্যানি ঠিক করে রেখে যান , সে নিজেও ওদেরকে খেলাধুলায় উৎসাহ দেয় । একদিন ন্যানি ওদেরকে নিয়ে চলে যায় এক দুঃসাহসিক অভিযানে । অতঃপর তারা ন্যানিসহ নিজেদের এক ভগ্নপ্রায় আর ভূতুড়ে প্রাসাদে আটক অবস্থায় পায় ।

অ্যা হুইস্কার অ্যাওয়ে ( A Whisker Away )

অ্যা হুইস্কার অ্যাওয়ে মুভিটি পরিচালনা করেছেন জুন’চি স্যাটি , টমোটাকা শিবায়মা এবং গল্পের লেখক ছিলেন মারি ওকাদা । মুভিটি ২০২০ সালে মুক্তি পায় । মিয়ো সাসাকি জাপানের একটা মিডল স্কুলের ছাত্রী । তার জীবনটা বিরক্তিকর আর ম্যাড়ম্যাড়ে । সৎ মায়ের সঙ্গে বনিবনা হয় না তার । একদিন তার জীবনে আসে কেন্তো হিনোডো । মিয়ো সাসাকি ছেলেটির প্রেমে পড়ে । সে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ঈঙ্গিত দেয় কেন্তোকে । কিন্তু পাত্তাই দেয় না ছেলেটা । একদিন মুখোশ বিক্রেতার কাছ থেকে অদ্ভুত এক মুখোশ কেনে মিয়ো । মুখোশটা পরে যেকোনো প্রাণীর রূপ ধারণ করা সম্ভব । মিয়ো একটা বিড়ালে পরিণত হয় এবং চেষ্টা করে কেন্তোর কাছাকাছি যাবার ।

আরো পড়ুন- 

গত দশকের বাংলাদেশের সেরা ১০ সিনেমার রিভিউ – বাংলা সিনেমা রিভিউ

     প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ,  চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। 

Back to top button