BEAUTY TIPStips

খুশকির কারন- খুশকির প্রতিকার ও ঔষধ

 খুশকি দুর করার আসল উপায়

খুশকির সমস্যা গোটা বিশ্বজুড়ে এক সমস্যা। এই খুশকি কখনও কখনও আমাদের অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতেও ফেলে দেয়। আর আমরা কেউই এই পরিস্থিতির স্বীকার হতে চাই না বলেই বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করি। তবে, সবসময় যে এই পন্থাগুলো কাজে লাগে তা নয়। কখনও হীতে বিপরীতও হতে পারে। তাই আমাদের এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানা অনেক প্রয়োজন। কারণ আমরা কেউই চাইবো না যে কোনো ঘরোয়া বা মেডিসিন ব্যবহার করে আমাদের চুলের কোনো ধরনের ক্ষতি করতে। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে সূচিপত্রটা পড়ে নেই এবং এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য কি কি থাকছে জেনে নেই।

আর্টিকেলে আপনাদের জন্য যা যা থাকছে

1.       খুশকি কি?

 

2.      লক্ষণ ও উপসর্গ

 

3.      খুশকির কারণ

 

4.      প্রতিকার ও ঔষধ

 

5.      কোন ধরনের সেম্পু ব্যবহার করবো?

খুশকির কারন- খুশকির প্রতিকার ও ঔষধ

খুশকি কি?

সাধারণত মাথার পাতলা চামড়া উঠাকেই আমরা খুশকি বলে থাকি। তবে খুশকি মূলত শরীরবৃ্ত্তীয় রোগ, যেমনঃ নাকের দুই পাশে লালচে ভাব, চোখের ভ্রুতে চুলকানি এবং কারও বুকেও হয়ে থাকে। আমাদের সবারই প্রতিবছরই চামড়া পরিবর্তন হয়, যা খুবই স্বাভাবিক। তবে খুশকি যা প্রধানত মাথায় হয়ে থাকে এবং এর চামড়া উঠার মাত্রা অনেক বেশি হয়ে থাকে, তাই এটিকে এক ধরনের রোগ হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি একজন মানুষের বয়সন্ধিকাল থেকে শুরু করে চল্লিশোর্ধ বয়স পর্যন্ত হয়ে থাকে। খুশকি বা Dandruff নামটি Oxford English Dictionary এর মতে প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৫৪৫ সালে।

লক্ষণ ও উপসর্গ

মৃদু চুলকানি এবং চামড়া ঝরে পড়াই হলো খুশকির লক্ষণ। তবে শরীরে লালচে দাগ এবং কিছুটা চামড়ার টানটান ভাবও এর লক্ষণ। নাকের দুই পাশে এবং দাড়িতে লালচে দাগ থাকা মানুষ বাংলাদেশে তেমন দেখা না গেলেও শীতপ্রধান দেশগুলোতে এটি বেশ পরিলক্ষিত হয়।

খুশকির কারণ

পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যা এবং বেশ কয়েক ধরনের ফাঙ্গাসের কারণে সাধারণত খুশকি হয়ে থাকে। অনেকেই আমরা ভেবে থাকি অপরিচ্ছনতার কারনেই খুশকি হয়। ধারণাটি সম্পূর্ন ভুল। আমাদের সবারই কমবেশি মাথার চামড়া উঠে এবং শীতকালে তা আরও খারাপের দিকে মোর নেয়। যখন নতুন চামড়া উঠে তখন তা পুরোনো চামড়াকে ঠেলে মাথা থেকে আলাদা করে দেয়। এই চামড়া উঠাটা অনেকের ২-৭ দিন পরপর হতে থাকে, যার ফলে তার মাথায় খুশকি অনেক হয়। অপরপক্ষে যাদের খুশকি খুব কম তাদের চামড়া উঠতে মাসখানিক লেগে যায়। নিচে দুইটি ফাঙ্গাসের নাম উল্লেখ করা হলো যারা খুশকির জন্য দায়ী।

·         Malassezia Globosa (মালাসেজিয়া গ্লোবোসা): প্রথম দিক দিয়ে Malassezia furfur নামের ফাঙ্গাসকে খুশকির আসল কারণ ধরা হলেও, পরে দেখা যায় যে এটি সব ধরনের মানুষের দেহেই বসবাস করে। পরে বিজ্ঞানীরা এই ফাঙ্গাসটি আবিষ্কার করে এবং এর কার্যক্রম বর্ণনা করেন। এই ফাঙ্গাসটি মানুষের মাথার চামড়ার উৎপাদন কয়েক গুন বাড়িয়ে দেয় এবং চামড়াগুলো আগের তুলনায় একটু বেশি পুরুও হয়। এর ফলে একজন সাধারণ মানুষের যেখানে চামড়া বদলাতে কয়েক মাস লাগে, সেখানে এই ফাঙ্গাস তা করে ফেলে এক সপ্তাহের ভিতরে।

·         Seborrhoeic Dermatitiss (সেবোরহোয়িক ডারমাটিটিস): এটি একধরনের চর্মরোগ যা Malassezia Yeast-এর কারণে হয়ে থাকে। এখানে খুশকি একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই ধরনের রোগে একজন মানুষের নাকের দুইপাশে, ভ্রুয়ের আশেপাশে, বুকে, এমনকি মাথায়ও লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। এরা মাথায় চুলকানির মাত্রা প্রবল করে দেয় এবং এতে মাথায় ক্ষতের  সৃষ্টি হয়। 

        প্রিয়জানালায় আরো বিউটি টিপস সম্পর্কে জানুন 

           👉মধুর জাদুকরী গুনাগুণ! মধুর উপকারিতা

👉 বাথসল্ট কি? রূপচর্চায় Bath Salts এর উপকারিতা জেনে নিন   

👉বেসনের ফেস প্যাক – বেসনের উপকারিতা- বেসনের ব্যবহার 

           👉গরমে ত্বকের যত্নের জাদুকরী ৫ টি প্যাক  

            👉খুশকির কারন- খুশকির প্রতিকার ও ঔষধ

 

খুশকির প্রতিকার ও ঔষধ

যেহেতু চামড়ার স্বাভাবিক ধর্মই বদলে যাওয়া, তাই খুশকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব না। তবে এটির মাত্রা সঠিক ঔষধ ও পরিচর্যার মাধ্যমে অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়। পৃথিবীতে অনেক ধরনের চিকিৎসাই বিদ্যমান। এই খুশকির মাত্রা স্বাভাবিকে নিয়ে আসার জন্য বিজ্ঞানীরা Antifungal বের করেছে। যা মূলত মাথার চামড়ার এই অধিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং এর মাত্রা স্বাভাবিকে নিয়ে আসে। Zinc Pyrithione (জিংক পাইরিথিয়ন), Selenium Disulfide (সেলিনিয়াম ডাই-সালফাইড) এগুলো খুশকি দুর করার খুবই কার্যকর পদ্ধতি। এখন কিছু ঔষধের নাম বলছি যা খুশকি দুর করার জন্য খুবই কার্যকরি এবং এগুলো বিশ্ব বাজারে স্বীকৃত এবং জনপ্রিয়।

Nizoral 2%: মাথার চামড়ার বা খুশকির অস্বাভাবিক বৃদ্ধিরোধই এর প্রধান কাজ। বাংলাদেশেও এটি পাওয়া যায় এবং দামও তেমন বেশি না। তবে এর ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যেকোনো মেডিসিনই অতিরিক্ত ব্যবহার বিপরীত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এটি ব্যবহারে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

Coal Tar: এটি আপনার Skin থেকে মৃত কোষগুলোকে দুর করে এবং এর বৃদ্ধিকে সীমিত রাখতে সাহায্য করে।এটি ব্যবহারে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

Tea Tree Oil: গুরুত্বপূর্ণ তেলের মধ্যে টি ট্রি ওয়েল একটি ভালো তেল যা খুশকি দুর করতে সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে গবেষক তাদের গবেষণা চালু রেখেছেন, বের করতে এর কার্যকারিতা ঠিক কতটুকু।এটি ব্যবহারে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

উপরোক্ত সব ধরনের স্যাম্পু, লোশন গুলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করতে যাবেন না। আমাদের মধ্যে একটু ডাক্তার হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকায়, আমরা নিজেদের ইচ্ছে মতো যেভাবে খুশি ব্যবহার করে থাকি। তবে একজন skin (চর্ম) বিশেষজ্ঞ আপনার খুশকির অবস্থা বুঝে আপনাকে ব্যবহারের বিধি-নিষেধ বলে দিবেন।

কোন ধরনের সেম্পু ব্যবহার করবো?

অবশ্যই Antidandruff (এন্টিডেনড্রফ) শ্যাম্পু ব্যবহার করবো। আমাদের মাঝে যাদের খুশকির প্রবলতা তেমন বেশি না, তারা বাজারে পাওয়া ভালো মানের এন্টিডেনড্রফ শ্যাম্পু ব্যবহার করলেই হবে। Head and Shoulder শ্যাম্পুও একটি ভালো মানের শ্যাম্পু। কেন বললাম? এর কারণ এর PH মান ৫.৫ থেকে ৬.৫ যা খুশকি দুর করার জন্য আদর্শ মান। এছাড়াও এই একই PH মানের যেকোনো শ্যাম্পু আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। PH আপনি প্রত্যেকটি প্রোডাক্টের লেভেলে লেখা দেখতে পাবেন।

পরিশেষে বলবো আমি নিজেই খুশকির কারণে অনেক ঝামেলায় ছিলাম। আমার ধরতে গেলে মোটামোটি ৭-৮ মাসই খুশকি থাকে মাথায়। তাই আমি সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাই। সরকারি হাসপাতালগুলো এসব ক্ষেত্রে অনেক ভালো ঔষধ দিয়ে থাকে। আমাকে ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছিলো Select+, সপ্তাহে মাত্র ১দিন। অনেক ভালো সুফল পেয়েছি। তাই আপনাদেরকেও পরামর্শ দেই যে ডাক্তারের সরণাপন্ন হন। কোনো রোগ সম্পর্কে নিজে জানার চেষ্টা করুন। হাজারো ইউটিউব ভিডিও আছে, হাজারো ব্লগ আছে। পড়েন, সতেচন হন এবং নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন। তাহলে আজ এই পর্যন্তই, ধন্যবাদ সবাইকে। 

  প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ,  চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। 

Back to top button